Tuesday, November 25, 2025

চট্টগ্রাম কারাগারে বসে অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ ছোট সাজ্জাদ রাজশাহী, স্ত্রী ঢাকায় বিশেষ কারাগারে


 কারাগারে বসে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের চট্টগ্রামের অপরাধ নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ অনেক পুরনো। সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন প্রকাশ ছোট সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না শারমীন। এমন অভিযোগের প্রমাণ মেলায় সাজ্জাদকে রাজশাহী কারাগারে এবং তার স্ত্রী তামান্না শারমীনকে ঢাকা বিশেষ (মহিলা) কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি দৈনিক পেকুয়ার আলোকে নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ।
গত ১৫ মার্চ গ্রেপ্তার হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকার পরও চট্টগ্রামে ডাবল মার্ডারসহ একের পর এক হত্যাকাণ্ডে নাম আসছে সাজ্জাদ হোসেন ও তার বাহিনীর। রায়হান, ইমনসহ তার সহযোগী দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা সবাই ধরাছোঁয়ার বাইরে। অক্ষত আছে তাদের অস্ত্র ভাণ্ডারও। বিভিন্ন সংস্থা ও পুলিশ জানিয়েছে তার ভাণ্ডারে আছে একে-৪৭সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র।
সাজ্জাদ নিজে ব্যবহার করত আমেরিকায় তৈরি দামি পিস্তল। প্রায় ২৫ জন অনুসারী নিয়ে গঠন করেছে নিজের বাহিনী। তাদের এসব অস্ত্র পাহাড়ের সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো থেকে সংগ্রহ করেছে বলে জানান পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। আর সেনাবাহিনীর সহযোগিতা ছাড়া এসব অস্ত্র উদ্ধার এক প্রকার অসম্ভব বলে জানায় পুলিশ।
হত্যা, চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে দায়ের হওয়া দেড় ডজন মামলার আসামি সাজ্জাদকে ইতিমধ্যে ৩০ দিনের বেশি রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ। কিন্তু তার আলোচিত কোনো সহযোগী কিংবা অস্ত্রের ভাণ্ডারে হাত দিতে পারেনি পুলিশ।
তার ভারী অস্ত্রের হদিস মিলছে না কেন ?’ কালের কণ্ঠের এমন প্রশ্নের জবাবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপির (চট্টগ্রাম নগর পুলিশ) একজন উপ-কমিশনার জানান, সাজ্জাদের অস্ত্রের উৎস পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। ছোট সাজ্জাদের বাহিনীতে রয়েছেন কমপক্ষে ২৫ জন সক্রিয় সদস্য, তারা অস্ত্রবাজিতে দক্ষ। চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের থেকে একে-৪৭সহ অত্যাধুনিক মরণাস্ত্র কিনেছে।
এসব অস্ত্র গহীন পাহাড়ে রেখেছে। পুলিশের যে লজিস্টিক সাপোর্ট আছে তাতে পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করা ঝুঁকিপূর্ণ।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি ‘সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় যৌথ অভিযান’ ছাড়া তার অস্ত্র ভাণ্ডারে হাত দেওয়া এই মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ। সাজ্জাদ তার সহযোগীদের পাহাড়ে নিয়ে অস্ত্র চালনায় দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলেছে বলেও জানান তিনি। 

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন নগরীর বায়েজিদ, অক্সিজেন, চান্দগাঁও এলাকায় পরিচিত ‘ছোট সাজ্জাদ’ বা ‘বুড়ির নাতি’ হিসেবে। কারণ বায়েজিদ, চান্দগাঁও, পাঁচলাইশ এলাকায় আগে থেকেই আছে বিদেশে পলাতক আরেক শীর্ষ সস্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সাম্রাজ্য। আন্ডার ওয়ার্ল্ডে একই নামে দুই সাজ্জাদ হওয়ায় একজন সাজ্জাদ আলী, আরেকজন ছোট সাজ্জাদ নামে পরিচিতি পায়। বুড়ির নাতি সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার ও মোহাম্মদ আনিসকে হত্যার অভিযোগ আছে। ২১ অক্টোবর প্রকাশ্যে  চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া এলাকায় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে গুলি করে হত্যা করে সাজ্জাদ।





শেয়ার করুন