বাংলাদেশ আনসার বাহিনীর এক সদস্যের মানবিক ও সাহসী উদ্যোগে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার এক পলাতক প্রতারককে রাজধানী ঢাকায় আটক করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ১১ নভেম্বর রাতে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। অভিযোগভুক্ত আসামির নাম মিনহাজ উদ্দিন (৩৪)। তিনি কক্সবাজারের চকরিয়া থানার এক প্রতারণায় অভিযুক্ত আসামি।
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘Hasan Tipu’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে “প্রতারক ধরিয়ে দিন” শিরোনামে মিনহাজ উদ্দিনের ছবি ও একটি মোবাইল নম্বর (০১৭৭৫-৯২০৪২১) পোস্ট করা হয়। এতে লেখা ছিল এই ব্যক্তি আমার ছোট বোনের স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে। পোস্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে তা আনসার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান-এর নজরে আসে। ছবিটি দেখে তিনি মন্তব্য করেন যে, ওই ব্যক্তিকে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের সামনের এলাকায় দেখেছেন বলে মনে হচ্ছে।
পরে তিনি পোস্টদাতা রবিউল হাসান টিপু-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে চান। রবিউল জানান, মিনহাজ আমার ছোট বোনের স্বামী। ২১ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে সে আমার বোনের স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় চকরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।
আনসার সদস্য অভিযোগপত্র দেখে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করে নিশ্চিত হন। এরপর তিনি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আবদুল আজিজ রোডের একটি চায়ের দোকানে সন্দেহজনকভাবে মিনহাজকে দেখতে পান।গোপনে ছবি তুলে রবিউলের কাছে পাঠালে তিনি নিশ্চিত করেন, হ্যাঁ, ছবির ব্যক্তিই মিনহাজ।
পরে রাত আনুমানিক ৯টা ৪০ মিনিটে রবিউল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিনহাজের সঙ্গে মুখোমুখি হন। উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হলে আনসার সদস্য বিষয়টি শান্তভাবে মীমাংসা করেন।
ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমি ফেসবুকে পোস্ট দেখে সন্দেহ হলে যাচাই করতে যাই। পরে দেখি ছবির ব্যক্তিই মিনহাজ। আমি উভয়ের বক্তব্য শুনে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের উপস্থিতিতে সমাধানের আশ্বাসে তাদের গাড়িতে তুলে দিই।
পরে মিনহাজ নিজেও স্বীকার করেন যে তিনি রবিউলের শ্যালক এবং স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করতে রাজি হন।ঘটনার পর রবিউল হাসান টিপু কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ আনসার সম্পর্কে আগে আমার ভুল ধারণা ছিল। কিন্তু আজ দেখলাম, তারা জনগণের প্রকৃত বন্ধু। যদি আনসার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান সহযোগিতা না করতেন, তাহলে মিনহাজ বিদেশে পালিয়ে যেত এবং আমাদের পরিবার ধ্বংস হয়ে যেত।
তিনি আরও বলেন, আমার বোন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল, এখন ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে। আনসার বাহিনীর কারণে আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব বলে আশা করছি।





