Tuesday, September 9, 2025

প্রথমবার ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা-ডাকসু নির্বাচন


 ছয় বছর পর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে পুরো জাতির দৃষ্টি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক বিকাশের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবেই এ নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে। সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও আগে থেকেই কেন্দ্রের সামনে শিক্ষার্থীরা লাইন ধরে দাঁড়িয়েছিলেন। প্রথমবারের মতো কাঙ্ক্ষিত এই ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি নির্ধারিত স্থানে এই ভোট কার্যক্রম চলছে।

ভোট দেয়ার পর সুমন হক নামে এক শিক্ষার্থী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, এই প্রথম তিনি তার জীবনের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘নিজের ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পারাটা আমার অধিকার এবং একই সাথে আমার জন্য এটা সম্মানের। ফ্যাসিজমের পতনের পর এরকম একটি পরিবেশে ভোট দিতে পেরে বেশ ভালো লাগছে।’

আরেক শিক্ষার্থী আলফাজ হোসেন বলেন, ‘আমি ভোটার হয়েছি আরো অনেক আগেই। কিন্তু ইচ্ছে মতো আমার পছন্দের প্রার্থীকে কখনোই ভোট দিতে পারিনি। এই প্রথম আমি আমার ইচ্ছে মতো ভোট দিতে পেরেছি এবং কেউ আমাকে এখানে জোর জবরদস্তি করেনি।’

তিনি আরো বলেন, ‘ডাকসুতে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারব এটাও কখনো ভাবিনি। তাই ভোট দিতে পেরে আসলে বেশ ভালো লাগছে।’

আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই প্রথমবার ভোট দিলাম। আর আমি খুবই আনন্দিত যে এমন একজন নেতাকে বেছে নেয়ার সুযোগ পেয়েছি, যিনি আমার কণ্ঠকে প্রতিনিধিত্ব করবেন।’

সহপাঠীদেরও ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ভোট দিয়ে এসে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি নিজের পছন্দমতো স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পেরেছি। আগের দিনে শুনতাম, কিছু সংগঠন শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নির্দিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করত, এমনকি তাদের হয়ে ব্যালটে ছাপ মেরে দিত। কিন্তু এবার এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

ডাকসুর চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭৩ জন এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।

ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হবে ১৩টি করে পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের জন্য প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন শিক্ষার্থী।

অন্যবারের তুলনায় এবার ডাকসুতে ব্যালটের আকার বেড়েছে। এবার ডাকসুতে থাকছে পাঁচ পৃষ্ঠার ব্যালট। আর হল সংসদের থাকছে এক পৃষ্ঠার ব্যালট। এ ভোট দিতে হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার (ওএমআর) শিটে। প্রতি ভোটারের জন্য আট মিনিট করে সময় রাখা হয়েছে।

আগে আট কেন্দ্রে ৭১০ বুথ ছিল। পরে সেটি বাড়িয়ে ৮১০ করা হয়েছে, যাতে আবাসিক-অনাবাসিক ভোটারদের কোনোভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ভোগান্তি পোহাতে না হয়।

প্রার্থী তালিকায় রয়েছে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, বামজোটসহ বিভিন্ন সংগঠন ও স্বতন্ত্র প্যানেল। নির্বাচনী লড়াইয়ে ভিপি ও জিএসসহ অন্যান্য পদে রয়েছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী প্রার্থীও।


শেয়ার করুন