Tuesday, July 22, 2025

মর্মান্তিক বিভীষিকা শোকার্ত দেশ


 
  • উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২০, বহু শিক্ষার্থী দগ্ধ
  • রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের শোক
  • কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি

মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক, নির্মম। প্রাণোচ্ছল, হাসিখুশি কচিকাঁচা মুখগুলো যেন নিমেষেই নিথর, নিস্তেজ, প্রাণহীন আর পুড়ে ছাই! কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবকিছু তছনছ। সন্তানহারা পিতা-মাতা আর স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ।

গতকাল সোমবার উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর এমন দৃশ্যেরই অবতারণা হয়েছে।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর বা আইএসপিআর এমন বিভীষিকাময় দুর্ঘটনায় বিমানের পাইলটসহ অন্তত ২০ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে। আহত হয়েছে আরো অন্তত পৌনে দুই শ। রাজধানীর হাসপাতালজুড়ে আহত ও তাদের স্বজনদের আর্তচিৎকার আর বিষাদময় আহাজারি।

সরকার অনাকাঙ্ক্ষিত মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।

শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাও। অন্যদের মধ্যে শোক জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ আরো অনেকে।

দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের জন্য বিমানবাহিনীর একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বেশ কয়েকজন উপদেষ্টাসহ সেনাপ্রধান ও বিভিন্ন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ঘটনাস্থলের প্রত্যক্ষদর্শী, ফায়ার সার্ভিস ও আইএসপিআর সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গতকালও শিশু শিক্ষার্থীরা ক্লাস শেষ করে মাত্র বের হয়েছে। কেউ কেউ তাদের মা-বাবা ও স্বজনদের জন্য অপেক্ষা করছিল। ঠিক ওই সময়, দুপুর ১টার পর হঠাৎ বিমানটি আছড়ে পড়ে ভবনের ওপর। মুহূর্তের মধ্যে সব ওলটপালট হয়ে যায়।ভয়ংকর বিস্ফোরণে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে।

যেভাবে দুর্ঘটনা

গতকাল দুপুর ১টার দিকে বিমানটি মাইলস্টোন স্কুলের ৫ নম্বর ভবনে আছড়ে পড়ে। ভবনটির নাম প্রজেক্ট-২। ওই ভবনে দুটি তলা মিলে মোট ১৬টি ক্লাস রুম। এর মধ্যে প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস হতো। ছুটির পর ভবনটিতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কোচিং করছিল। ভবনটির তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ক্লাস রুমের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) বুলবুল আহমেদ বলেন, ঘটনার সময় আমাদের প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। শিক্ষকরা দ্রুত তাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে তৎপর হন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রমে সহায়তা করি।

বিমান বিধ্বস্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় আতঙ্ক দেখা দেয়। শিক্ষার্থীদের মা-বাবা, স্বজনসহ স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা সন্তানদের খোঁজে কলেজে ছুটে আসেন। ঘটনাস্থলে লাকি আক্তার নামে এক অভিভাবক তাঁর সন্তানের খোঁজ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তিনি বলেন, তাঁর দুই সন্তান মাইলস্টোনে পড়ে। বড় সন্তানকে বের করতে পারলেও ছোট সন্তানকে খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। 

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষিকা পূর্ণিমা দাস জানান, দুপুর ১টার দিকে ক্লাস শেষ হলে কোচিংয়ের জন্য কিছু শিক্ষার্থী স্কুলে ছিল। সোয়া ১টার দিকে বিমানটি আছড়ে পড়ে ভবনে আগুন ধরে। হঠাৎ বিকট শব্দ। বাচ্চারা দৌড়াদৌড়ি করছিল। তাদের সারা গায়ে আগুন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী কলেজটির নিরাপত্তাকর্মী আকবর হোসেন বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দে সামনের নারকেলগাছ ভেঙে ভবনে ধাক্কা দেয় বিমানটি। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। তিনতলা ভবনের নিচতলা মাটির নিচে, সেখানে ক্লাস হয় না। বিমানটি সেখানে ঢুকে পড়ে।

যা বলছে আইএসপিআর

বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে (সোমবার ২১-৭-২০২৫) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ঢাকার কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পর যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয় (যার বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে জানানো হবে)। দুর্ঘটনা মোকাবেলায় এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়ীতে মাইলস্টোন স্কুল এবং কলেজের দোতলা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়।

এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় বৈমানিকসহ ২০ জন নিহত এবং অন্তত ১৭১ জন আহত হয়েছে। আহত সবাইকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুল্যান্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। ওই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনী গভীরভাবে মর্মাহত এবং হতাহতদের সর্বাত্মক চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতায় তৎপর রয়েছে বলে জানিয়েছে। বিমানবাহিনী প্রধান সরকারি সফরে দেশের বাইরে থাকায়, সহকারী বিমানবাহিনী প্রধান (প্রশাসন), বিমানবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও উদ্ধারকারী দল দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।

সেনাবাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ সামরিক বাহিনীর এবং ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তারা দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও ফায়ার সার্ভিস দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালায়।

আইএসপিআর জানায়, আট হাসপাতালে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন মোট ১৭১ জন। এর মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আটজন, জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন, ঢাকা মেডিক্যালে তিনজন, ঢাকা সিএমএইচে ১৭ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একজন, উত্তরা লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে ৬০ জন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে আহত একজনকে ভর্তি করা হয় বলে জানা গেছে।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটে দুজন, সিএমএইচে ১১ জন, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে দুজন, লুবনা জেনারেল হাসপাতালে দুজন, উত্তরা আধুনিক হাসপাতালে একজনের মরদেহের কথা জানায় আইএসপিআর। তবে ফায়ার সার্ভিস সূত্র বলছে, এই দুর্ঘটনায় রাত ৮টা পর্যন্ত তারা ২০ জনের মরদেহ পেয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল এ তথ্য জানান। 

ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যরা

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান, র‌্যাবের মহাপরিচালক শহীদুর রহমান। বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা কিভাবে ঘটল, সরকার সেটি ক্ষতিয়ে দেখবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। গতকাল বিকেলে আহতদের দেখতে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বার্নে ভর্তি ৩৮ জনের শরীর পুড়ে গেছে

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, দগ্ধদের মধ্যে ৩৮ জনের শরীর পুড়ে গেছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দগ্ধ হয়েছে ১৫টি শিশু। আরো রয়েছেন ৯ জন নারী ও ১৪ জন পুরুষ।

দগ্ধদের মধ্যে এ বি শামীম (১৪) ৯৫ শতাংশ, সায়েন ইউসুফ (১৪) ৯৫ শতাংশ, শামীয়া (১০) ২৫ শতাংশ, মাহিয়া (১৫) ৫০ শতাংশ, নাফিজ (৯) ৯৫ শতাংশ, মাসুকা (৩৭) ৮৫ শতাংশ, বাপ্পী সরকার (৯) ৩৫ শতাংশ, মাসুমা (৩২) ৬০ শতাংশ, আফনান ফায়েজ (১৪) ৯৫ শতাংশ, মনতাহা (১০) ৫ শতাংশ, রূপি বর্ণ (১০) ৬ শতাংশ, জায়ানা (১৩) ৮ শতাংশ, শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম (৩৭) ১৫ শতাংশ, ইশা (১১) ৬ শতাংশ, পায়েল (১২) ১০ শতাংশ, তাসনিয়া (১০) ৫ শতাংশ, কাব্য (১৩) ২০ শতাংশ, জাকির (৫৫) ৫ শতাংশ, সায়েবা (৯) ১৬ শতাংশ, তৌফিক (১৩) ৯ শতাংশ, নিশি (২৪) ১৩ শতাংশ, আলভিরা (১০) ৫ শতাংশ, নুসরাত (১২) ৬ শতাংশ, জুনায়েদ (১২) ১৪ শতাংশ, শ্রেয়া (৯) ৫ শতাংশ, শিক্ষক সুমাইয়া লরিন (৩০) ১৫ শতাংশ, কাফি আহমেদ (১০) ১০ শতাংশ, আয়াত (১৪) ১২ শতাংশ, লিমন (১৭) মাথায় দগ্ধ, রোহান (১৪) ৫০ শতাংশ, আবিদুর রহমান (১০) ২০ শতাংশ, আয়ান (১৪) ৪০ শতাংশ, আরিয়ান আফিফ (১২) ৩৫ শতাংশ, মকিন (১৫) ৬২ শতাংশ, সায়েমা (৯) ৮ শতাংশ এবং মেহেরিনের (১১) শরীরের ৪ শতাংশ পুড়ে গেছে।

৭ শিশু শনাক্তই করা যায়নি

গত রাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহতদের মধ্যে সাতটি শিশু এতটাই পুড়েছে যে তাদের (চেহারা বা অবয়ব) শনাক্তই করা যায়নি। তাদের ডিএনএ সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে।

বিশেষ সহকারী বলেন, যারা পুড়েছে, তাদের মধ্যে বেশি বয়সী শুধু উদ্ধারকর্মী, সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, দুজন শিক্ষক এবং একজন স্টাফ। এ ছাড়া অন্য সবাই শিশু। শিশুর সংখ্যা এক শর বেশি। এদের অল্পসংখ্যক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় গেছে। বেশি বয়সী ১৫ জনের মতো আছেন।

ভয়ংকর চিত্র হাসপাতালে : জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ৫২০ নম্বর কক্ষের মেঝেতে মেয়েকে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন ইয়াসমিন আক্তার।  তিনি বলছিলেন, তাঁর দুই ছেলেমেয়ে। ১১ বছর বয়সী পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে নুরে জান্নাত ইউশা বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, আমার মেয়ের কপাল পুড়ে গেছে, মুখ ঝলসে গেছে, মাথা ফেটে গেছে, পিঠও পুড়ে গেছে। আমাকে মেয়ে বলে যে মা, আমার সব জ্বলে

বিলাপ করতে থাকা নাসিমা বেগমের ছেলে রবিউল হাসান রোহান সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী। রোহানের শরীর পুড়ে গেছে। নাসিমা বেগম বলছিলেন, এমন দশা ক্যামনে হইছে রে। আমার রোহান যন্ত্রণায় কাতরাইতাছে রে।

উত্তরা আধুনিক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক চিকিৎসক আকাশ বলেন, এখানে অগ্নিদগ্ধ ১২০ জন চিকিৎসা নিয়েছে। বেশির ভাগেরই শরীর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বেশির ভাগেরই বয়স ১৪ থেকে ২০ বছর। দুই জন মারা গেছে। তার মধ্যে একজনের বয়স ১৫ বছর, আরেকজনের ২০ বছর।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে জরুরি হটলাইন চালু : জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে জরুরি হটলাইন চালু করা হয়েছে। হটলাইন নম্বর ০১৯৪৯০৪৩৬৯৭।

রাষ্ট্রপতির শোক প্রকাশ : রাজধানীর উত্তরা এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

গতকাল সোমবার এক শোকবার্তায় তিনি এই শোক জানান।

রাষ্ট্রপতি দুর্ঘটনায় নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টার শোক : এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এরা আমাদের সবারই সন্তান। হঠাৎ করে চিরদিনের জন্য চলে গেল। আমরা অবশ্যই এই ঘটনার তদন্ত করব। আর যারা আহত, আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছি।

গতকাল দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

হাসপাতালে ভিড় না করার অনুরোধ জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, আমরা সবার কাছে অনুরোধ করছি, হাসপাতালে ভিড় করবেন না। তাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধের শক্তি নেই। আমরা ভিড় করলে আমাদের শরীর থেকে কী রোগ তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে এটা বলা মুশকিল। কাজেই দূরে থেকে দোয়া করেন সবাই।

এ ছাড়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারাও গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের শোক : বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

খালেদা জিয়া নিহত ও আহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেন এবং মহান আল্লাহ যেন শোকার্ত পরিবারগুলোকে সন্তান হারানো কিংবা আহত হওয়ার ঘটনায় ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা দান করেন এই দোয়া করেন। দুর্ঘটনায় নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনাসহ মুমূর্ষু অবস্থায় যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে, তাদের আশু সুস্থতা কামনা করেন তিনি।

এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে গতকাল শোকবার্তা দেন।

তারেক রহমান লিখেন, আমার আন্তরিক প্রার্থনা শোকসন্তপ্ত তরুণদের আত্মার সঙ্গে রয়েছে এবং আমি বিএনপির নেতা, কর্মী ও পেশাদারদের ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানাচ্ছি। ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে আমাদের একসঙ্গে এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।


শেয়ার করুন